ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় ২০২২ । ফেসবুকে আয়

ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় : ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার অন্যতম সেরা উপায় হলো ফেইসবুক। ফেসবুকে কয়েক হাজার ফ্রেন্ডস বা ফলোয়ার বানিয়ে মাসে কত পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার যেটাই থাকুক খুব সহজেই ফেসবুকে টাকা আয়ের পদ্ধতি বের করে নিতে পারবেন। ( make money from facebook )

বর্তমানে অনলাইনে আয় করার জন্য মানুষ সহজ ও দ্রুত উপায়গুলো বেঁছে নিতে চায়। দ্রুতই বড় হওয়ার চেষ্টা করেন সবাই। তাই আপনি যদি ইন্টারনেট থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে ফেসবুক বেঁছে নিতে পারবেন।

ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়

অনলাইনে আয় করার জন্য বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় কয়েকটি মাধ্যম হলো- ফেসবুক থেকে আয়, ইউটিউব থেকে আয় ও ব্লগিং করে আয়। ফেসবুক থেকে আয় করার অন্যতম সেরা দুটি উপায় হলো- বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং।

ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়

অনলাইনে আয়ের বেশিরভাগ কাজগুলো হয়ে থাকে এ দুটি পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং যারা করে থাকেন তারা অন্যভাবে আয় করে থাকে। তবে বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং এর কোনো চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গুগল এডসেন্সের মতো ফেসবুকও এখন দুটি এড সিস্টেম চালু করেছে যার মাধ্যমে ভিডিও ও আর্টিকেলে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। ফলে বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয় করা যায়।

বিস্তারিত ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় জানার পূর্বে আরো যে বিষয়গুলো আপনার জানতে হবে সেগুলোর উপর কিছু ধারণা জেনে নেয়া যাক।

ফেসবুক কি এবং কেন?

এটা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার অন্যতম সেরা উপায় হলো ফেসবুক।

ফেসবুকের শুরুটা হয়েছিলো বিজনেসের জন্যেই। ফেসবুক নিয়ে আমি নতুন করে কিছু বলতে চাই না, কারণ ফেসবুক সম্পর্কে সবাই কম-বেশি জানেন।

বর্তমানে ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ যেমন এক স্থান থেকে অন্যস্থানে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে ঠিক তেমনই এর জনপ্রিয়তা থাকায় এটায় ব্যবসা করার জন্য ক্রেতা-বিক্রেতার অভাব নেই।

eSIM কি, eSIM ব্যবহারের সুবিধা কি

ফেসবুকের মাধ্যমেই বিজনেস চালু করে অনলাইনে কেনাবেচা করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এটার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।

ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তা হয়তো অনেকেই কম-বেশি জানেন। আর যারা সম্পূর্ণ নতুন তারা এখান থেকে পূর্ণ গাইডলাইন পেয়ে থাকবেন।

ফেসবুক থেকে আয় করতে হলে করণীয় কি?

অনলাইনে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে হলে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে ও ফেসবুক কমিউনিটি গাইডাইল এবং মনিটাইজেশন পলিসি মেন্টেন করতে হবে।

আপনি যদি বিজনেস পলিসি বা মাথার ব্রেইন কাজে লাগাতে পারেন তাহলে ফেসবুক থেকেই আপনার মোটা অংকের টাকা কামানো সম্ভব হবে।

কিভাবে মোটা অংকের টাকা কামানো যাবে তা নির্ভর করবে আপনার প্রচেষ্টার উপর। আপনি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকামের আইডিয়াগুলো জেনে সেটার উপর লেগে থাকবেন তাহলেই আয় বাড়াতে পারবেন।

করণীয় কাজ সমূহঃ

  • কাজের টপিক সিলেক্ট করা
  • টপিক অনুযায়ী ভিজিটর/ক্রেতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা
  • অধ্যাবসায় করা
  • ইন্টারনেটে রিসার্চ করে আইডিয়া খুঁজে বের করা
  • প্রযুক্তির সাথে আপডেট থাকা
  • বিজনেস পলিসি মেইন্টেইন করা
  • ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ তৈরি করা
  • আকর্ষনীয় প্রেজেন্টেশন করা ইত্যাদি।

প্র্যাক্টিকেলি কাজ করার সময় আপনাকে আরো অনেক কিছুই করতে হবে। তাই শুরুতেই বড় কিছু পাওয়ার আশা না করে কাজ করতে থাকবেন এবং যত কাজ করবেন তত শিখতে পারবেন এবং অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে।

আরো পড়ুনঃ

ফেসবুকে আয় করতে কি কি লাগবে?

ঘরে বসে ফেসবুকে আয় করার জন্য আপনার একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার প্রয়োজন হবে। এছাড়াও কিছু বেসিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। যেমন- ফেসবুক কমিউনিটি গাইডলাইন জানা, টাইপিং, তথ্য সোর্স করা, ফেসবুক পেজ ফলোয়ার বাড়ানোর কৌশল ইত্যাদি।

আপনি যে টপিকের উপর কাজ করে ফেসবুক থেকে আয় রোজগার করবেন সেই টপিক রিলেটেড কাজগুলো আপনার বেসিক জেনে নিতে হবে। যেমন- আপনি যদি ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল লিখে আয় করতে চান তাহলে আপনাকে ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে হবে ও এসইও সম্পর্কে জানতে হবে।

এছাড়া আপনার যদি কম্পিউটার/ল্যাপটপ থাকে তাহলে সেটার ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। ইন্টারনেটে ব্রাউজিং করে কিভাবে তথ্য নেয়া যায় সেইসব বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। এগুলো একেবারে বেসিক কাজসমূহ। আশা করি আপনি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে থাকবেন।

ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?

জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সেরা কিছু উপায় হলো- ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল, ভিডিও আপলোড, ফ্যান পেজ সেলিং, গ্রুপ সেলিং, পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, ডিজিটাল মার্কেটিং, গেমিং ও স্পন্সরশীপ ইত্যাদি।

এখানে প্রতিটি বিষয়ের উপর ধারণা নেয়ার পর আপনি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় সমূহ নিয়ে ধারণা নেয়া যাক।

১। ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল লিখে আয় করার উপায়

Instant article আর্টিকেল মানে হলো “তাৎক্ষণিক নিবন্ধ”। ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সিস্টেমটি চালু করার জন্য আপনার একটি ওয়েবসাইট তৈরিফেইসবুক পেইজ ওপেন করতে হবে।

ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগ আর্টিকেল লিখতে হবে এবং সেই আর্টিকেল থেকে আয় করার জন্য ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সিস্টেমটি চালু করতে হবে।

ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল
ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল

ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল চালু করার অন্যতম কারণ হলো এখানে লোডিং টাইম কম নেয় এবং ফেসবুক পেইজে ফলোয়ার বাড়ানোর মাধ্যমে আর্টিকেল সবার কাছে পৌছায় ও সেই আর্টিকেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আর্নিং করা যায়।

সাধারণত ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পোস্ট করলে সেটার লোড টাইম অনেক বেশি নেয়। আর কিছু ওয়েবসাইটের সার্ভার ভালো থাকায় লোড টাইম কম নিলেও প্রয়োজন পরে মোটা অংকের টাকা। তাই দ্রুত আর্টিকেলটি পড়ার জন্য লোডিং টাইম কম লাগে এমন একটি ফ্রি সুবিধা হলো “ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল”।

ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল চালু করার জন্য আপনাকে একটি ফেসবুক পেজ খুলতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে কতগুলো আর্টিকেল পাবলিশ করা হলে ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল চালু করতে পারবেন।

আপনার ফেসবুক পেইজ থেকে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল চালু করার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার পেইজে যদি গত ২৮ দিনে ৫০,০০০ হাজার ইউনিক ভিজিটর ভিজিট করে থাকে তাহলে আবেদনটি গ্রহণ করা হবে এবং ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল চালু হয়ে যাবে। তখন আপনার ওয়েবসাইটে যত আর্টিকেল পাবলিশ করবেন তা অটোম্যাটিকেলটি ফেসবুক পেইজে শেয়ার হয়ে যাবে।

ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের মাধ্যমে আয় করার প্রধান হাতিয়ার হলো “বিজ্ঞাপন”।

যখন আপনি ফেসবুকের ডেভেলপার অপশনে যেয়ে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল অপশন চালু করবেন সেখানেই আপনার আর্নিং হওয়া ডলার জমা হবে। ব্যাংকের মাধ্যমে আর্নিং হওয়া ডলার উঠাতে পারবেন। মূলত এভাবেই ফেসবুকে লেখালেখি করে আয় করা যায়।

২। ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে আয় করার উপায়

ভিডিও আপলোড করে আয় করতে পারবেন ফেসবুক থেকে। ফেসবুকের মাধ্যমে আয় করার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ভিডিও আপলোড করা।

ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে আয়
ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে আয়

ফেসবুকের রিকুয়ারমেন্ট অনুযায়ী আপনার ফেসবুক পেইজে গত ৬০ দিনের মধ্যে যদি ভিডিওর ভিউ টাইম ৬০০,০০০ হয়ে থাকে তাহলে আপনার পেইজে ভিডিওর মধ্যে অ্যাড দেখানো হবে। অর্থাৎ ভিডিওতে মনিটাইজেশন পাওয়া যাবে এবং ভিডিওর এডের মাধ্যমে আর্নিং হয়ে থাকবে।

এছাড়াও মনিটাইজেশন অন করার জন্য আপনার আপনার ফেসবুক পেজে কম পক্ষে ১০,০০০ হাজার রিয়েল ফলোয়ার প্রয়োজন হবে।

আপনি যদি অটো লাইক বা ভিডিও বুস্ট করেন তাহলে সেগুলো কাউন্ট করা হবে না। তাই পেইজে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য একটু পরিশ্রম করুন এবং ফেসবুক কমিউনিটি গাইডলাইন ফলো করুন।

ফেসবুক পেইজে ভিডিওর মনিটাইজেশন অন করা নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু আপডেট নিয়ে আশা হয়। আপনি ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইনগুলো ফলো করে ভিডিওতে মনিটাইজেশনের জন্য এপ্লাই করার চেষ্টা করবেন।

ফেসবুকে আপনি ফ্যান পেজ বা বিজনেস পেজ যেটাও খুলুন না কেন আপনি মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।

এভাবে প্রতিনিয়ত ফেসবুকে নানা রকম বিনোদন বা শিক্ষামূলক ভিডিও আপলোড করে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে পারবেন খুব সহজেই।

৩। ফেসবুক ফ্যান পেজ বিক্রি করে টাকা আয় করার উপায়

আপনি যদি ক্রয় বিক্রয় কাজ করার ইচ্ছে থাকে তাহলে ফেসবুক পেজ খুলে বিক্রি করে দিতে পারবেন খুব সহজেই। ফেসবুক ফ্যান পেজ বা বিজনেস পেজ যেটাইল বলেন রিয়েল লাইক-ফলোয়ার থাকলে সেটা বিক্রি করে দিতে পারবেন।

এমন অনেকেই রয়েছে যারা ফেসবুক পেজ ক্রয় করে বিভিন্ন ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করে। তারা পেজ ক্রয় করে মার্কেটিং এর মতো কাজগুলো করে থাকে। তাই ফেসবুক পেজ বিক্রি করে টাকা আয় করার চাহিদাও রয়েছে অনেক।

বিভিন্ন টপিক পছন্দ করে ফ্যান পেজ বানিয়ে ফেসবুকেই সেল করে দিতে পারবেন। এছাড়া মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন এমন কোনো পেজ থাকলে সেগুলো সেল করে দিতে পারবেন। কারণ সেই পেজগুলো অনেকে ক্রয় করে তাদের বিক্রি বাড়ানোর জন্য ফলোয়ারদের কাছে বিভিন্ন পণ্যের প্রচার প্রচারণা করে থাকবে। এভাবে ফেসবুক ফ্যান পেজ বিক্রি করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

৪। ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয় করার উপায়

আপনি যদি ফেসবুকে একটি গ্রুপ তৈরি করেন এবং সেখানে অনেক মেম্বারযুক্ত করতে পারেন তাহলে ফেসবুক গ্রুপ থেকেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক গ্রুপ থেকে অনেক ভাবেই আয় করা যায় যেমন- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সারশীপ, নিজের পণ্য মার্কেটিং করে বিক্রি, ডোনেশন সংগ্রহ ও গ্রুপ সেল ইত্যাদি।

ফেসবুক পেইজের চেয়ে গ্রুপের মেম্বার বাড়ানো অনেক সহজ ও দ্রুত সম্ভব। তাই আপনার যদি কোনো গ্রুপ না থাকে তাহলে ফেসবুকে গ্রুপ খুলে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

আপনি যদি শিক্ষামূলক একটি গ্রুপ তৈরি করেন এবং সেখানে নানা রকম শিক্ষণীয় পোস্ট করেন তাহলে ডোনেশন সিস্টেমে আয় করতে পারবেন। কারণ আপনাকে যারা ফলো করবে তারা আপনাকে কিছু উপর দেয়ার চেষ্টা করবে এবং ডোনেশন সিস্টেমটি চালু করলে সবাই ডোনেশন করে উপহার দিতে পারবে। তাই এরজন্য আপনাকে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে এবং গ্রুপে মেম্বার বা সাবস্ক্রিপশন বাড়াতে হবে।

এছাড়া আপনার নিজস্ব কোনো প্রডাক্ট থাকলে সেগুলো প্রমোট করে বিক্রি করতে পারবেন। যদি নিজস্ব প্রডাক্ট না থাকে তাহলে ই-কমার্স সাইট থেকে অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট খুলে তাদের প্রডাক্ট বিক্রি করে কমিশনের মাধ্যমে আয় করতে পারেন।

তাই আপনি যদি অনলাইনে আয় করতে চান তাহলে ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয় করার পদ্ধতিটি ফলো করতে পারেন।

৫। ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করে আয় করার উপায়

বর্তমানে ফেসবুকে মানুষ নানা রকম ব্যবসায় করে থাকে। আপনি যদি অনলাইনে কোনো ব্যবসা চালু করতে চান তাহলে ফেসবুক বেঁছে নিতে পারেন। ফেসবুকে আপনি কয়েকটি উপায় বিজনেস করতে পারবেন যেমন- পেজ, গ্রুপ এবং একাউন্ট খোলার মাধ্যমে।

ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা
ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা

আপনি যদি ফেসবুকে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঠিক কি ধরনের প্রডাক্ট নিয়ে ব্যবসা চালু করতে চাচ্ছেন।

ফেসবুকে মানুষ অনেক ধরনের প্রডাক্টই ক্রয়-বিক্রয় করে থাকেন যেমন- ইলেকট্রনিক জিনিস, জামা কাপড়, খাবারদাবার ইত্যাদি।

আপনার প্রডাক্টগুলো যারা ক্রয় করবে এমন ধরনের ফেসবুক ফ্রেন্ডস বানানোর চেষ্টা করবেন এবং প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে।

ফেসবুক আইডিতে প্রডাক্ট সম্পর্কে প্রতিদিন কিছু আপডেট দেয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়া বিভিন্ন গ্রুপে অ্যাড হয়ে সেখানে আপনার প্রডাক্টগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবেন এবং চাইলে লাইভ ভিডিওর মাধ্যমেও প্রডাক্টগুলো ক্রেতাদের কাছে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারেন।

এছাড়াও আপনি একটি ফেসবুক পেজ খুলে নিবেন যেখানে আপনার পণ্যগুলো সম্পর্কে পোস্ট করবেন এবং পেইজের ফলোয়ার বাড়ানোর চেষ্টা করবেন।

পেইজের মধ্যে আপনি বিজনেস রিলেটেড কাজগুলো করার পাশাপাশি বিনোদন মূলক পোস্টও করার চেষ্টা করবেন। কারণ ফেসবুকে মানুষ বিনোদনের জন্য বেশি ভিজিট করে থাকে। এর কারনে আপনার পেইজে লাইক-ফলোয়ার বাড়ার পাশাপাশি ক্রেতাদের ধরে রাখতে পারবেন।

এভাবে আপনি ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

৬। ফেসবুক মার্কেটিং করে আয় করার উপায়

ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করার জন্য অন্যতম সেরা একটি উপায় হলো ফেইসবুক। ফেসবুকে এখন নানা রকম নান্দনিক টাইপের প্রডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করা হয়।

একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো বিক্রয় বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে প্রচার-প্রচারণা করাই হলো মার্কেটিং।

আপনার যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা দোকান অথবা স্টক প্রডাক্ট থাকে তাহলে খুব সহজেই ফেসবুকে মার্কেটিং করার মাধ্যমে পণ্যগুলো বিক্রয় করে দিতে পারবেন।

পণ্য বিক্রয় করার জন্য আপনার ফেসবুক প্রোফাইল, পেজ বা গ্রুপ কাজে লাগাতে পারেন। প্রতিটির মধ্যে ফলোয়ার বা ক্রেতা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন।

এছাড়া স্পন্সর বা বুস্ট করার মাধ্যমে যদি মার্কেটিং করেন তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি সুবিধা হবে। এর মাধ্যমে পণ্যগুলো নির্দিষ্ট ক্রেতাদের কাছে উপস্থাপণ করা হবে। ফলে প্রডাক্টগুলো দ্রুত বিক্রয় হবে।

এভাবে আপনি পেইড মার্কেটিং করেও ভালো মানের টাকা ইনকাম করতে পারবেন ফেসবুক থেকে।

ফেসবুক থেকে আয় করার জন্য আপনি যদি মার্কেটিং বেঁছে নেন এবং আপনার কোনো প্রডাক্ট নেই কিন্তু মার্কেটিংটাই করতে চান তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম জনপ্রিয় একটি অংশ হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। এটা করা হয় মূলত অন্যের প্রডাক্ট মার্কেটিং করে বিক্রয় করার মাধ্যমে।

আপনি অনলাইনে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট দেখতে পাবেন যেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রডাক্ট বিক্রয় করা হয়। যেমন- Amazon, Alibaba, Envato, Ebay ইত্যাদি।

আপনি তাদের প্রডাক্টগুলো ফেসবুকে মার্কেটিং করে সেল করে দিতে পারলে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন। এভাবে যতগুলো প্রডাক্ট আপনি বিক্রয় করে দিতে পারবেন প্রত্যেকটি থেকে আপনাকে লাভ দেয়া হয়ে।

এভাবেই ফেসবুকে ডিজিটাল মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করা হয়। আপনি চাইলে এই উপায়টি বেঁছে নিতে পারেন কারণ এটার অনেক চাহিদা রয়েছে।

৭। স্পন্সরশীপ করে টাকা আয় করার উপায়

ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার অন্যতম একটি উপায় স্পন্সরশীপ। এর মাধ্যমে টাকা আয় করাটা কিছুটা কঠিন। কিন্তু আপনার যদি একটি চাহিদাসম্পন্ন গ্রুপ বা পেজ তাহলে সহজ হবে।

এটা হলো আপনার পেজ বা গ্রুপে ভিজিটর বেশি থাকলে বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্যক্তিবর্গ তাদের পণ্যগুলো স্পন্সার করার জন্য আপনার সাথে চুক্তি করবে।

আপনি তাদের পণ্যটি স্পন্সার করে বিনিময় তাদের কাছ থেকে টাকা নিতে পারবেন। তাদের কাছ থেকে এই টাকাগুলো ব্যাংক বা বিকাশের মাধ্যমেও পেমেন্ট নিতে পারবেন।

স্পন্সারশীপ পাওয়ার জন্য আপনার নিজেকে ব্র্যান্ড ভাল্যু অর্জন করতে হবে। আপনি যদি জনগণের ভালোবাসা অর্জন করতে পারেন  তাহলে আপনার কথাগুলো তারা ফলো করবে এবং যেগুলো এডভাইস করবেন সেগুলো তারা মেনে চলবে।

আপনি যে বিষয় নিয়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করবেন সেই রিলেটেড বা ভালো মানের প্রডাক্টগুলোর স্পন্সার দেয়ার চেষ্টা করবেন। কোনো খারাপ প্রডাক্ট স্পন্সার করলে আপনার ভালোবাসার মানুষগুলো হারিয়ে যেতে পারে ফলে আপনার কোনোটাই হয়ে উঠবে না।

এছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য ই-কমার্স সাইট থেকে প্রডাক্ট প্রচার প্রচারণা করার জন্য স্পন্সার করতে পারেন ফলে সেভাবেও স্পন্সরশীপের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন।

স্পন্সরশীপের মাধ্যমে আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করেন তাহলে সেটা পেইড মার্কেটিং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। সুতরাং ফেসবুক থেকে আয় করার জন্য স্পন্সরশীপ বেঁছে নিতে পারেন।

ফেসবুক থেকে টাকা আয় করে বিকাশে পেমেন্ট

আরো অনেক প্রকার ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশিরা যারা ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করে বিকাশে পেমেন্ট নেয়ার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন তারা নিচের আইডিয়াগুলো বেঁছে নিতে পারেন।

  • ফেসবুক পেজ এর মডারেটর হওয়া
  • গ্রুপের মডারেটর হওয়া
  • কাস্টমার সাপোর্টার হওয়া
  • ফ্যান পেজ/প্রোফাইল পেজ প্রমোট করে দেওয়া
  • পোস্ট বুস্ট করে দেওয়া

এই কাজগুলো করে আপনি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে উইথড্রো করতে পারেন।

ফেসবুকে অনেকেই পোস্ট বুস্ট করতে চায় ও পেইজের লাইক-ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য পেজ প্রমোট করে। তাদের মধ্যে অনেকের কাছেই ডলার থাকে না বা বুস্ট করার নিয়ম জানে না। তাই আপনি যদি তাদের কাজগুলো করে দিতে পারেন তাহলে বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে টাকা নিতে পারবেন।

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় কি?

ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল, ভিডিও আপলোড করা ও মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুক পেজ বেঁছে নেওয়া সবচেয়ে সুবিধাজনক। এটা হলো ফেসবুক থেকে আয় করার উপযুক্ত একটি মাধ্যম।

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম
ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম

ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে ফেসবুক পেজ থেকে কিভাবে টাকা আয় করবেন তা নিয়ে আমি উপরে বেশ কয়েকটি টপিক নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রত্যেকটির মধ্যে ফেসবুক পেজ এর গুরুত্ব দেখানো হয়েছে।

আপনি যদি ফেসবুকে একটি ফ্যান পেজ তৈরি করেন এবং ফেসবুকে সময় কাটানোর পাশাপাশি ফ্যান পেইজটির মধ্যে বিনোদনমূলক পোস্ট করে লাইক ফলোয়ার বাড়াতে থাকেন তাহলে একটা সময় যেয়ে আপনার পেজটি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। ফলে ফ্যান পেজটি দিয়ে উপরের আলোচিত উপায়গুলোর মাধ্যমে ফেইসবুক পেইজ থেকে আয় করতে পারবেন।

ফেসবুক মনিটাইজেশন

আপনি যদি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে মনিটাইজেশন সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে। কারণ মনিটাইজেশন অন করার পর থেকেই ফেইসবুক পেইজ থেকে আয় করতে পারবেন।

সাধারণত ফেসবুক ৩ ধরনের এডভারটাইজমেন্ট দিয়ে থাকে। যেমনঃ

  1. In-stream ads eligibility
  2. Fan subscriptions eligibility
  3. Branded content ads

ফেসবুক পেইজে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য আপনার পেজটি ফেসবুক কমিউনিটি গাইডাইলের সাথে একমত থাকতে হবে। এছাড়াও মনিটাইজেশন পাওয়ার পর monetization পিলিসি মেনে চলতে হবে।

মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য যেসব Rules Follow করতে তা নিচে তুলে ধরা হলো-

  • কোনো ফটো/ভিডিও কপি করে পেইজে আপলোড দেয়া যাবে না।
  • ১০,০০০ ফলোয়ার ও মনিটাইজেশনের জন্য আবেদনের দিন থেকে পেছনের গত ২৮ দিনে ৬০০,০০০ মিনিট ভিডিও ওয়াচ টাইম লাগবে।
  • ফেসবুক মনিটাইজেশন পার্টনার পিলিসি মেন্টেন করতে হবে যেন কোনো ভায়োলেশন না আসে।
  • কনটেন্ট মনিটাইজেশন পলিসি মেন্টেন করতে হবে ভিডিওর মান যেন ভালো হয় ও ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখার জন্য।

ফেসবুক মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য আপনাকে ভায়োলেশন মেন্টেন করে না চললে আপনার পেইজে মনিটাইজেশন অন করতে পারবেন না। অনেক সময় কোনো ব্র্যান্ড বা ইউটিউব ভিডিও প্রমোট করার জন্য # ট্যাগ ও ইউটিউব লিংক ডেস্ক্রিপশনে দিলে সেটার violation চলে আসে। তাই ফেসবুক পেইজে ভায়োলেশন যেন না আসে সেটা মেনে কাজ করার চেষ্টা করবেন।

উপসংহারঃ (ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়)

কম্পিউটার/মোবাইল দিয়ে ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করেছি। আপনি যদি ফেসবুকে প্রতিনিয়ত সময় নষ্ট করে থাকেন তাহলে নষ্ট করা সেই সময়টি কাজে লাগানোর জন্য উপরের ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কাজে লাগাতে পারেন। এভাবে আপনি বিনোদনের পাশাপাশি ইনকামও করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!